অবসর সময়ে ভ্রমণ করুন ও দেশ সম্পর্কে জানুন - পর্যটনবিডি.কম
Description AboutTourism or Parjatan Place of Hobiganj
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুারিষ্ট বা পর্যটক কুমিল্লা জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
জেলার সদর উপজেলার রাজিউরা ইউনিয়নের উচাইল গ্রামে অবস্থিত প্রায় ৬শ বছরেও বেশি পুরোনো শংকরপাশা শাহী মসজিদ। ইটের তৈরি এক গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটির চারপাশের বাইরের দেয়াল পোড়ামাটির অলঙ্করণে ঢাকা। জানা যায় আলাউদ্দিন হুসেন শাহের আমলে (১৪৯৩-১৫১৯ খ্রি.) অনেক মজলিস আমিন মসজিদটি নির্মাণ করেন।
বানিয়াচং উপজেলার রয়েছে নানান লোককাহিনীর উৎস কমলা রানীর সাগরদিঘি। প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এক কিলোমিটার প্রস্থের এ দিঘিটি আকারে খুব বড় বলে স্থানীয়রা একে সাগরদিঘি বলেন।
বানিয়াচং উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে বিথঙ্গল গ্রামে রয়েছে শ্রী রামকৃষ্ণের আখড়া। বিথঙ্গল আখড়ার দর্শনীয় বস্তুগুলোর মধ্যে কষ্টিপাথরের মূর্তি, পিতলের সিংহাসন, প্রায় পঁচিশ মন ওজনের শ্বেতপাথরের চৌকি উল্লেখযোগ্য। আখড়ার পাশেই রয়েছে প্রায় আশি ফুট উঁচু একটি মঠ।
বানিয়াচং উপজেলার চানপাড়া গ্রামে রয়েছে বাংলার প্রথম ভূ-পর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা। এখানেই ১৮৯৪ সালে জন্ম নেন এই মহান ব্যক্তি। পায়ে হেঁটে,সাইকেলে এবং রেলে প্রায় সাতাশি হাজার মাইল ভ্রমণ করে নিজের নামটি ইতিহাশে জায়গা করে নিয়েছিল তিনি। ভ্রমণের ওপর ৩২টি বইও লেখেন তিনি।
বাহুবল উপজেলায় রয়েছে বেশ কয়েচকটি চা বাগান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- দারাগাঁও ফিনলে টি এস্টেট, বৃন্দাবন চা বাগান, ফয়জাবাদ চা বাগান, আমতলী চা বাগান, রশিদপুর চা বাগান ইত্যাদি।
জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। রঘুনন্দন পার্বত্য বনভূমিতে সংরক্ষিত এ বনাঞ্চলের বিস্তৃতি প্রায় ২৪৩ হেক্টর। উদ্যানটির গোড়ার ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, জুম চাষ করতে করতে একসময় রঘুনন্দন পাহাড়ের বনভূমি শেষ হয়ে যায়। পরে ১৯০০ সালের দিকে কাঠ উৎপাদনের জন্য প্রচুর গাছ লাগানো হয় পাহাড়ি এ অঞ্চলে। এরপর ১৯১৪ সালে সংরক্ষিত বনভূমি হিসেবে খাতায় নাম লেখায় জায়গাটি। এর দীর্ঘকাল পরে ২০০৫ সালে এ এলাকার নির্দিষ্ট কিছু জায়গা নিয়ে জাতীয় এ উদ্যানটি প্রতিষ্ঠা।
সাতছড়ি অর্থ সাতটি ছড়া, অর্থাৎ পাহাড়ি ঝরনা। এসব ছড়ার কোনো কোনোটির দেখা মেলে আজো। জাতীয় এ উদ্যানটিতে জীববৈচিত্র্যের কমতি নেই। উদ্যানের বাসিন্দা প্রায় ১৯৭ প্রজাতির জীবের মধ্যে ১৪৯ প্রজাতিই পাখি। সাতছড়িকে তাই পাখিরন রাজ্য বললেও বেশি বলা হবে না। এ ছাড়া ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ৬ প্রজাতির উভচর প্রাণীর সন্ধান মিলেছে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে। মুখপোড়া হনুমান, চশমা হনুমান, উল্লুক, সজ্জাবতী বানর, কুলু বানরের মতো বিরল প্রানণীর দেখা মেলে এ উদ্যানে। এ ছাড়া মায়া হরিণ, খিদির শূকর, বন্যশূকর, বেজি, গন্ধগোকুল, বনবিড়াল, মেছোবাঘ, কটকটি ব্যাঙ, গেছোব্যাঙ, গিরগিটি, বিভিন্ন রকম সাপ, গুইসাপ প্রভৃতি রয়েছে এ বনে। ফিঙে, কাঠঠোকরা, মথুরা, বন মোরগ, ধনেশ, লাল ট্রগন, পেঁচা, সুই চোরা এ বনের উল্লেখযোগ্য পাখি।
পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানোর জন্য সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে তিনটি ট্রেইল পথ আছে। একটি আধা ঘণ্টার, অন্যটি এক ঘণ্টার এবং আরেকটি তিন ঘণ্টার হাঁটা পথ।আধা ঘণ্টার হাঁটা পথটির শুরু সাতছড়ি রেঞ্জ কার্যালয়ের প্রবেশপথের কাছাকাছি প্রধান সড়কের পাশে ‘ওয়াইল্ডারনেস এরিয়া’ লেখা বোর্ডের কাছ থেকে। সড়কের দক্ষিণে দিকে পথের শুরু হয়ে চক্রাকারে ঘুরে আবার একই জায়গায় এসে পথটি ইতি টেনেছে। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এ পথে একটি মরা শুকনা নদী অতিক্রম করা ছাড়া বাকি পথ ঘাসে ঢাকা। সাতছড়ি উদ্যানের ভেতরে একমাত্র ত্রিপুরা বাঁ টিপরা আদিবাসী পাড়াটিতে এ পথেই যেতে হবে।
এক ঘণ্টায় হাঁটা পথটির শুরু আধা ঘণ্টার পথটি ধরেই এ পথের শুরুতে ডান দিকে প্রথম যে বাঁকটি টিপরা পাড়ার দিকে গেছে সেদিকে না গিয়ে আরো কিছুটা পথ চলে দ্বিতীয় বাঁকটি ধরে চলতে হবে। একটু সকালের দিকে এবং নীরবতা বজায় রাখলে এ পথে দেখা মিলতে পারে উল্লুকের মতো বিপন্ন প্রাণী।তিন ঘণ্টার হাঁটা জপথটির দৈর্ঘ্য প্রায় ছয় কিলোমিটার। অন্য দুটি পথের পাশ থেকেই এটিরও শুরু। তবে শেষ হয়েছে পূর্বদিকের চাকলাপুঞ্জি চা বাগানের কাছাকাছি প্রধান সড়কে এসে। এ পথটির বেশির ভাগই শুকনা ছাড়া পথ। উল্লুক, চশমা হনুমান, মুখপোড়া হনুমানসহ নানান পাখির দেখা মিলতে পারে এ পথে।
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানটির মধ্যে যে টিপরা পাড়াটি আছে সেখানে আদিবাসী ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ২৪টি পরিবারের বসবাস। বন দেখার সঙ্গে সঙ্গে এখানে দেখে আসতে পারেন এ আদিবাসীদের জীবনধারা।সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে প্রবেশের জন্য প্রাপ্তবয়স্ক জনপ্রতি ২০ টাকা, অপ্রাপ্তবয়স্ক ও ছাত্র-ছাত্রী জন প্রতি ১০ টাকা, বিদেশীদের জন্য ৫ ইউএস ডলারের সমমূল্যের টাকা। উদ্যানের বনভোজন কেন্দ্র ব্যবহার করতে চাইলে জনপ্রতি ১০ টাকা হিসেবে দিতে হবে।
চুনারুঘাট উপজেলার সীমান্তে অবস্থিত কালেঙ্গা সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এ বনের প্রধান বৃক্ষ বড় বড় চাপালিশ, জাম, হরীতকী ইত্যাদি। বনের ভেতরে রয়েছে সুউচ্চ একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। মুখপোড়া হনুমান, চশমা হনুমান এ বনাঞ্চলের অন্যতম আকর্ষণ। বন বিভাগের একটি বাংলো আছে এখানে।হ।
মাধবপুর উপজেলার রঘুনন্দন পাহাড়ের নিচে হবিগঞ্জ গ্যাসফিল্ডের পাশে ২ হেক্টরেরও বেশি জায়গাজুড়ে রয়েছে ফ্রুটস ভ্যালি। প্রায় ১৩০ রকম ফলের গাছ আছে এ বাগানটিতে। এ ছাড়াও নানা ধরনের দুর্লভ গাছও আছে এখানে। পরিকল্পিত এ বাগানটি বেশ সাজানো গোছানো।
রামনাথ বিশ্বাসের বাড়ি
বানিয়াচং উপজেলার চানপাড়া গ্রামে রয়েছে বাংলার প্রথম ভূ-পর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা। এখানেই ১৮৯৪ সালে জন্ম নেন এই মহান ব্যক্তি। পায়ে হেঁটে,সাইকেলে এবং রেলে প্রায় সাতাশি হাজার মাইল ভ্রমণ করে নিজের নামটি ইতিহাশে জায়গা করে নিয়েছিল তিনি। ভ্রমণের ওপর ৩২টি বইও লেখেন তিনি।
শিবপাশা বাবরি মসজিদ
বাহুবল উপজেলার শিবপাশা গ্রামে রয়েছে প্রাচীন আমলের পাথরের তৈরি বাব্রি মসজিদ। জানা যায় সৈয়দ রুকন শাহ এবং সৈয়দ আইনুন শাহ নামে দুজন বুজুর্গ ব্যক্তি মসজিদটি প্রতিষ্টা করেন।
শেখ ভানু শাহের সমাধি
জেলার লাখাই উপজেলা সদর থেকে এক কিলোমিটার দূরে ভাদিকারা গ্রামে রয়েছে সাধক পুরুষ ভানু শাহের সমাধি। ১৯৩৩ সালে বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতির উদ্যোগে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সাহিত্য সম্মেলনে বাংলাদেশের মরমি কবিদের মধ্যে যে চারজঙ্কে দার্শনিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল ভানু শাহ তাঁদেরই একজন। শচীন দেব বর্মণের গাওয়া বিখ্যাত গান ‘নিশীথে যাইও ফুলবনে’ গানের গীতিকার ভানু শাহ।
অমৃত আশ্রম
লাখাই উপজেলা সদর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বামৈ গ্রামে অবস্থিত অমৃত আশ্রম। ১৯১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শ্রী শ্রী ঠাকুর সায়ানন্দ দেব আশ্রমটি প্রতিষ্ঠা করেন।