অবসর সময়ে ভ্রমণ করুন ও দেশ সম্পর্কে জানুন - পর্যটনবিডি.কম
Description AboutTourism or Parjatan Place of Joypurhat
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুরিষ্ট বা পর্যটক জয়পুরহাট জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
জয়পুরহাট শহর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে বেল আমলা গ্রামে ছোট যমুনার তীরে অবস্থিত। এখানে আয়তাকার একটি চত্বরের ওপর সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে একই আকারের বারটি মন্দির। প্রতিটি মন্দিরের ভেতরে আছে একটি করে শিবলিঙ্গ। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে কিংবা ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে রাজীবলোচন মণ্ডল নামে এক ধনাঢ্য হিন্দু ব্যক্তি মন্দিরগুলো নির্মাণ করেছিলেন বলে জানা যায়। বারশিবালয় মন্দিরের প্রায় আধা কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে একই রকম আরো পাঁচটি মন্দির আছে। ফাল্গুন মাসের শিব চতুর্দশীতে বারশিবালয় মন্দির এলাকায় মেলা ও বারুণী স্নান অনুষ্টিত হয়।
জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নে প্রায় পঁচিশ বিঘা জায়গাজুড়ে রয়েছে প্রাচীন দিঘি আছরাঙ্গা। ধারণা করা হয় দিঘিটি প্রায় বারশ বছরের পুরোনো। আবার জনশুতি আছে তাহিরপুর রাজপরিবারের মনুভট্ট এ দিঘিটি খনন করেন। ১৯৯২ সালে দিঘিটি পুনরায় খননের সময় বেশ কিছু প্রাচীন মূর্তি পাওয়া যায় এখানে।
জেলার কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নে অবস্থিত আরেকটি প্রাচীন দিঘি। ৫৯.৪ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত এ দিঘিটির দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার। জনশ্রুতি আছে রাজা নন্দালাল এক রাতের মধ্যে এ দিঘিটি ১৬১০ সালে খনন করেন। শীতে এখানে প্রচুর অতিথি পাখির সমাগম ঘটে।
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার পশ্চিম কড়িয়া গ্রামে অবস্থিত লকমা রাজবাড়ি। প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত এ রাজবাড়িটি ৩০০ বছর আগে নির্মিত। বর্তমানে এখানে রাজপরিবারের উত্তরাধিকারীরা বসবাস করেন।
জেলার পাঁচবিবি রেল স্টেশন থেকে চার কিলোমিটার উত্তরে তুলসীগঙ্গা নদীর তীরে আছে পাথরঘাটা মিশন। এখানে আছে আধুনিক স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত একটি গির্জা। এ এলাকার আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অসংখ্য ইট, পাথরও মৃৎপাত্রের টুকরা। ধারণা করা হয় বহু আগে একটি জনপদ ছিল। এখানকার মিশন কার্যালয়ে সংরক্ষিত আছে প্রচুর প্রত্নবস্তু। তবে সে সংগ্রহের বড় অংশই খোয়া যায় স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়। পাথরঘাটা মিশনারির আশপাশের এলাকায় ওঁরাও, সাঁওতাল, রাজবংশী, মুণ্ডা প্রভৃতি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের বসবাস উপভোগ করা যাবে।
কালাই লোকসংস্কৃতি সংগ্রহশালা
কালাই উপজেলা সদরের কাছেই মহাসড়কের পাশে অবস্থিত কালাই লোকসংস্কৃতি সংগ্রহশালা। প্রাচীন পুঁথি, চিত্রকর্ম, প্রাচীন গহনা, বাদ্যযন্ত্র, গৃহস্থালি সামগ্রীসহ তিনশরও বেশি সামগ্রী এখানে প্রদর্শিত হচ্ছে। এসবের মধ্যে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের দুর্গতা ও ভিখারিনী চিত্রকর্ম, ১৩৩৪ সালে প্রকাশিত মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকা, এ অঞ্চলের বিখ্যাত হরিদাসের পুঁথি, বিষহরি পুঁথির অনুলিপি উল্লেখযোগ্য।
নওপুকুরিয়া
পাথরঘাটা মিশনের কিছুটা পশ্চিম দিকে একই জায়গায় বড়আকারের নয়টি জলাশয় আছে। জলাশয়গুলোর তিনটি ছাড়া বাকি সবই ভরাট হয়ে গেছে। তবে এগুলোর অস্তিত্ব এখনো বিদ্যমান। জলাশয়গুলোর ইট-পাথরের বাঁধানো ঘাট এখনো টিকে আছে।
নিমাই পীরের দরগা
পাথরঘাটা গির্জা থেকে প্রায় ২০০ মিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত নিমাই পীরের দরগা। কেউ কেউ জানেন নাসির উদ্দীন পীরের দরগা। দরগার বাইরের দিকে মাটির ভেতরে গাঁথা প্রাচীন পাথরের একটি স্তম্ভখণ্ড আছে। দরগার দেয়ালে সুলতান নাসির উদ্দীন নসরত শাহর(১৫১৯-৩১) আমলের একটি শিলালিপি ছিল, যা এখন আর নেই। তবে শিলালিপিটিতে এখানকার কবরে শায়িত ব্যক্তির নাম ছিল না। প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসে এখানে গ্রামীণ মেলা বসে।
জেলার আক্কেলপুর উপজেলা থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে গোপীনাথপুরে অবস্থিত মন্দিরটি গোপীনাথ ঠাকুরের মন্দির নামে পরিচিত। প্রাচীন এ মন্দিরটির নির্মাণশৈলী খুবই আকর্ষণীয়।