অবসর সময়ে ভ্রমণ করুন ও দেশ সম্পর্কে জানুন - পর্যটনবিডি.কম
Description About Tourism or Parjatan Place of Chittagong
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুরিষ্ট বা পর্যটক চট্রগ্রাম জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের বদনাতলী পর্বতমালা থেকে উৎসারিত হয়ে ফটিকছড়ি উপজেলার উত্তর-পূর্ব কোণ থেকে চট্টগ্রামে প্রবেশ করেছে। কালুরঘাটে এসে নদীটি মিশেছে কর্ণফুলীতে। বর্ষা মৌসুমের আগে হালদা নদীতে প্রাকৃতিকভাবে রুই-কাতলা মাছের প্রজনন হয়। প্রায় ৮০.৪৫ কিমি. দৈর্ঘ্যের এ নদীটি তাই দেশের অন্যান্য নদী থেকে ব্যতিক্রম।
চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩৭ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কের উত্তর পাশে অবস্থিত দেশের প্রথম ইকোপার্ক। সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড় ও এর আশপাশের এলাকায় ২০০৪ সালে গড়ে তোলা হয়েছে এ ইকোপার্ক। পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে নানান প্রজাতির গাছপালা ছাড়াও এ পার্কের ভেতর রয়েছে কয়েকটি ছোট-বড় পাহাড়ি ঝরনা। চট্টগ্রামের অলঙ্কার মোড় থেকে বাসে ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা যাওয়া যায়।
সীতাকুণ্ড ইকোপার্কের পাশেই রয়েছে চন্দ্রনাথ পাহাড়। ইকোপার্কের প্রায় এক কিলোমিটার সামনে সীতাকুণ্ড বাজারের ভেতর থেকে ছোট্ট একটি সড়ক চলে গেছে পাহাড়ের দিকে। এ পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ার উচ্চতা ৩৬৫ মিটার। পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার পথটিও বেশ দুর্গম। বাজার ছেড়ে কিছুক্ষণ হাঁটার পরেই পথটি ক্রমশ উপরের দিকে ওঠে গেছে। চলতি পথেএখানে দেখা যাবে ইত্যাদি। এরপরে বেশ কিছুটা পথ ওঠার পরে আছে ভবানী মন্দির। ভবানী মন্দির ছেড়ে কিছু দূর গেলেই দেখা মিলবে শয়ভুনাথ মন্দিরের। এখান থেকে হাঁটতে হাঁটতে সামনেই আছে ঝিরিঝিরি ছন্দে বয়ে চলা একটি ছোট্ট পাহাড়ি ঝরনা। ঝরনা ছেড়ে সামনের পথ খুবই দুর্গম।
পাহাড় কেটে বানানো সিঁড়িটির ধাপগুলো বেশ উঁচু উঁচু। একটু উঠলেই হাঁপিয়ে যেতে হয়। কিছুটা পথ কষ্ট করে উঠলেই প্রাচীন দুটি বটবৃক্ষের দুটি মন্দির। পুরোনো মন্দিরটির নাম বিরূপাক্ষ মন্দির। এ জায়গাটির উচ্চতা প্রায় দু’শ মিটার। এখান থেকে দক্ষিণ দিকে তাকালে দেখা মেলে বিস্তীর্ণ বঙ্গোপসাগর। এখান থেকে পূর্বদিকে পথ চলে গেছে পাহাড়ের একেবারে চূড়ায় চন্দ্রনাথ মন্দিরে। এখানে দাঁড়িয়ে চারপাশের দৃশ্য বড়োই মনোহর। প্রতি বছর শিব চতুদর্শী পূজা উপলক্ষে তিন দিনের মেলা বসে সীতাকুণ্ডে। এ সময়ে লাখো হিন্দু ভক্তের পাহাড় বেয়ে চন্দ্রনাথ মন্দিরে ওঠার দৃশ্য দূর থেকে পিপড়ার সারির মতো মনে হয়। যাদের পাহাড়ের ওঠার সমস্যা আছে নিজস্ব গাড়ি কিংবা সিএনজি চালিত অটো রিকশা নিয়ে ইকোপার্কের ভেতরের সড়ক ব্যবহার করে যেতে পারেন চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায়।
সীতাকুণ্ড এলাকায় বাড়বকুণ্ড পাহাড়ের একটি উষ্ণ প্রস্রবণ বাড়বকুণ্ড। ছোট এ জলপ্রপাতটিতে সব সময় আগুন জ্বলতে দেখা যায়। সীতাকুণ্ড বাজার থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণে গেলে বাড়বকুণ্ড পাহাড়ের এ উষ্ণ প্রস্রবণের দেখা মিলবে।
চট্টগ্রামের ভাটিয়ারি এলাকায় মনোরম একটি জায়গায় অবস্থিত বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি। সবুজ পাহাড়ে ঘেরা মিলিটারি একাডেমি ঘুরে দেখা যায় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে। বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ভাটিয়ারিতে এর ঠিকানা হয় ১৯৭৬ সালের মার্চ মাসে।
চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে আনোয়ারা উপজেলার গহিরা এলাকায় রয়েছে মনোরম একটি সমুদ্রসৈকত পারকি। প্রায় পঁচিশ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সৈকতের তীরজুড়ে আছে বিস্তীর্ণ ঝাউবন। সমুদ্রের সৌন্দর্যের পাশপাশি এখানে উপভোগ করা যাবে জেলেদের মাছ ধরার নানান কৌশল ও তাদের জীবনধারা। শহর থেকে পারকি সৈকতে যেতে অটোরিক্সায় যাওয়া যাবে।
শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে আরেকটি সুন্দর সমুদ্রসৈকত বাঁশখালী। ঝাউগাছে ঘেরা দীর্ঘ একটি সমুদ্রসৈকত আছে এখানে। শহরের বহদ্দারহাট থেকে বাসে এসে নামতে হবে মুনছুরিয়া বাজার। সেখান থেকে রিকশায় সমুদ্রসৈকত। বাসে যেতে সময় লাগে এক ঘণ্টার মতো।
বাঁশখালী সমুদ্রসৈকতের পাশেই আরেকটি পরিকল্পিত পর্যটন কেন্দ্র বাঁশখালী ইকোপার্ক। লেক ঘেরা এ ইকোপার্কে আছে দেশের সবচেয়ে বড় ঝুলন্ত সেতু, উঁচু পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, বিশ্রামাগার ইত্যাদি। এর কাছাকাছি দুরত্বে আছে চুনতি অভয়ারণ্য। চট্টগ্রাম থেকে এক দিনেই জায়গাগুলো দেখে আসা যায়।
মেঘনার মোহনায় অবস্থিত চট্টগ্রাম জেলার একটি দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ। প্রায় ৭৬২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ দ্বীপে মূলত জেলেদের বসবাস। চট্টগ্রাম থেকে শীত মৌসুমে সি-ট্রাক ও ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যাওয়া যায় এ দ্বীপে। থাকার জন্য কিছু সাধারণ মানের হোটেল আছে সন্দ্বীপ উপজেলা শহরে।
লালদীঘি
কোর্ট বিল্ডিংয়ের কাছেইরয়েছে ঐতিহাসিক লালদীঘি। লালদীঘি নামের পেছনে ছোট্ট একটি ইতিহাস রয়েছে লোকমুখে। এই জায়গায় অনেক আগে ছিল চোট্ট একটি জলাশয়। ব্রিটিশ শাসনামলের শুরুতে এই জলাশয় খুঁড়ে রূপ দেয়া হয় দিঘিতে। দিঘির পাড়ে ছিল বড় বড় কৃষ্ণচূড়া গাছ। ফুল ফোটার মৌসুমে ফুলে ফুলে লালা হয়ে যেত দিঘির পাড়। সম্ভবত সেজন্যই এর নাম হয়েছে লালদীঘি। আবার অনেকের মতে দিঘির পূর্ব দিকে তৎকালীন সময়ে যে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট এবং ট্রেজারি বিল্ডিং ছিল দুটোরই রঙ ছিল লাল। এর পাশেই ছিল জেলখানা। তার রঙও ছিল লাল। সেসময়ে জেলখানাকে বলা হত লালঘর। একারণেই হয়তো এ দিঘির নাম হয়েছে লালদীঘি। দিঘির উত্তর পাশে আছে জমিদার রায় বাহাদুরের স্মৃতিস্তম্ভ। লালদীঘির পাশেই রয়েছে ঐতিহাসিক লালাদীঘিরময়দান।
পাথরঘাটা
চট্টগ্রামের প্রধান মৎস্যবন্দর। সমুদ্র থেকে মাছ ধরার ট্রলারগুলো এসে নোঙর করে এখানেই। বিভিন্ন রকম সামুদ্রিক মাছের পসরা দেখতে হলে যেতে হবে এ জায়গাটিতে।
কুমারী কুণ্ড
চট্টগ্রামের কুমিরায় চোট্ট একটি পাহাড়ি ঝরনার নাম কুমারী কুণ্ড। এখানে কুমিরা পাহাড়ের ওপরে এ ঝরনাটির অবস্থান। কুমারী কুণ্ডর বৈশিষ্ট্য হল প্রায় দশ হাতে জায়গাজুড়ে এখানে সবসময় আগুন জ্বলে।