অবসর সময়ে ভ্রমণ করুন ও দেশ সম্পর্কে জানুন - পর্যটনবিডি.কম
Description AboutTourism or Parjatan Place of Noakhali
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুরিষ্ট বা পর্যটক নোয়াখালী জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
জেলা সদর থেকে প্রায় পঁচিশ কিলোমিটার উত্তরে সোনাইমুড়ী উপজেলার রুহুল আমিন নগর (সাবেক বাগপাচড়া) গ্রামে অবস্থিত বীরশ্রষ্ঠ রুহুল আমিন স্মৃতি জাদুঘর। মুক্তিযুদ্ধের এ অমর শহীদ ১৯৩৪ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি এ গ্রামেই জন্মগ্রহণ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর অবদানকে স্মরণীয় করেরাখতে সরকারি উদ্যোগে এখানে নির্মিত হয়েছে একটি জাদুঘর ও পাঠাগার। নোয়াখালী সদর থেকে সোনাইমুড়ীগামী যে কোনো বাসে উপজেলা সদরে এসে রিকশা বা বেবিট্যাক্সিতে যাওয়া যায়।
জেলা সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তরে বেগমগঞ্জ উপজেলার জয়াগ গ্রামে অবস্থিত গান্ধী আশ্রম। ১৯৪৬ সালে জুলাই-আগস্ট মাসে বৃহত্তর নোয়াখালী জেলায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ছুটে আসেন মহাত্মা গান্ধী। ১৯৪৭ সালে গান্ধী জয়াগ আসেন। এসময়ে স্থানীয় জমিদার হেমন্তকুমার ঘোষ তাঁর সব সম্পত্তি মহাত্মা গান্ধীকে দান করলে সেখানে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন অম্বিকা কালীগঙ্গাদাতব্য ট্রাস্ট।
তবে সেটা পরিচিতি লাভ করে গান্ধী ট্রাস্ট নামেই। শুরু থেকেই গান্ধী ট্রাস্ট এ এলাকার মানুষের কল্যাণে কাজ করে আসছে। বর্তমানে এ আশ্রমে মহাত্মা গান্ধীর ব্যবহৃত কয়েকটি সামগ্রী ও গান্ধীর একটি ভাস্কর্য আছে। নোয়াখালী সদর থেকে সোনাইমুড়ীগামী যে কোনো বাসে জয়াগ বাজারে নেমে সেখান থেকে আধা কলোমিটার দূরে আশ্রমে যেতে হবে রিকশায়।
জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার বজরা গ্রামে অবস্থিত প্রায় তিনশ বছরের প্রাচীন মসজিদ। আয়তাকার এই মসজিদটি ইটের তৈরি। এর চার কোনায় চারটি বুরুজ ও পূর্ব দেয়ালে তিনটি প্রবেশপথ আছে। উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালে আছে প্রবেশপথ। পশ্চিম দেয়ালের তিনটি মিহরাবের মধ্যে মাঝেরটি অপেক্ষাকৃত বড়। মসজিদের উপরের তিনটি গম্বুজের মধ্যে মাঝেরটি বড়।
প্রধান প্রবেশপথের উপরে স্থাপিত শিলালিপি অনুযায়ী মুঘল সম্রাট মুহাম্মদ শাহের আমলে জনৈক আমানউল্লাহ কর্তৃক মসজিদটি ১৭৪১-৪২ সালে নির্মিত। বেষ্টনী দেয়ালে ও মসজিদের ভেতরের দেয়ালে লাগানো বাংলা ও ফারসি ভাষায় লিখিত শিলালিপি অনুযায়ী বাংলা ১৩১৮ থেকে ১৩৩৫ অর্থাৎ ১৯১১-১৯২৮ সালের মধ্যে বজরার জমিদার খান বাহাদুর আলী আহমদ এবং খান বাহাদুর মুর্জার উদ্দীন আহমদ মসজিদটির সংস্কার করেন। আদিতে মসজিদটি পলেস্তরায় আবৃত ছিল। সংস্কার করার সময় মসজিদের পুরো দেয়াল চীনা মাটির পাত্রের টুকরা দিয়ে নিকশা করা হয়েছে। নোয়াখালী সদর থেকে সোনাইমুড়ীগামী যে কোনো বাসে বজরা হাসপাতালের সামনে নেমে হাঁটা পথের দুরত্বে বজরা শাহী মসজিদের অবস্থান।
নোয়াখালী জেলার দক্ষিণাংশে হাতিয়া উপজেলায় বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা ছোট্ট একটি দ্বীপ। বল্লার চর, কামলার চর, চর ওসমান ও চর মুরি নামে চারটি প্রধান দ্বীপ ও ছোট ছোট চর নিয়ে প্রায় ১৪০৫০ একর এলাকা নিয়ে এ জায়গাটি। উত্তর-দক্ষিণে এ দ্বীপ প্রায় নয় কিলোমিটার লম্বা এবং পূর্ব পশ্চিমে সাত কিলোমিটার চওড়া।
বাংলাদেশ সরকার এখানে উপকূলীয় বনাঞ্চল গড়ে তুলেছে। ২০০১ সালে নিঝুম দ্বীপ পায় জাতীয় উদ্যানের মর্যাদা। ১৯৭৪ সালে সর্বপ্রথম এ বনে সুন্দরবন থেকে চার জোড়া চিত্রা হরিণ অবমুক্ত করা হয়। তা থেকে বংশ বিস্তার করে বর্তমানে এ বনে। হরিণের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। কোনো হিংস্র বন্যপ্রাণী নেই বলে সুন্দরবনেও এতো কাছাকাছি থেকে চিত্রা হরিণের বিচরণ দেখা যায় না। এ ছাড়া সারা বছরই বিচিত্র্যসব পাখির দেখা মেলে এ দ্বিপে।