অবসর সময়ে ভ্রমণ করুন ও দেশ সম্পর্কে জানুন - পর্যটনবিডি.কম
Description AboutTourism or Parjatan Place of Natore
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুরিষ্ট বা পর্যটক নাটোর জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
নাটোর জেলা শহরের বঙ্গজ্জল এলাকায় রয়েছে রানী ভবানী রাজপ্রাসাদ। তোরণ পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলে চোখে পড়বে রাজবাড়ির কামান। রাজবাড়ির ভেতরে রয়েছে ৬টি দিঘি। আর পুরো রাজবাড়ি বাইরের দিক থেকে লেক আকৃতির দিঘি দিয়ে ঘেরা। ভেতরে রয়েছে বড় তরফ ভবন নামে পরিচিত রানী ভবানীর রাজপ্রাসাদ। সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত সুরম্য এ ভবনটি আজোসবার দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম। জানা যায়, রাজা রামজীবন ১৭০৬-১৭১০ সালের কোনো এক সময় পুঠিয়ার রাজার কাছ থেকে প্রায় ১৮০ বিঘার একটি বিল দান হিসেবে গ্রহণ করে সেখান এই রাজপ্রাসাদ গড়ে তোলেন। রাজা রামজীবনের এক মাত্র ছেলে কলিকা প্রসাদ মারা গেলে তাঁর দত্তক ছেলের সঙ্গে রানী ভবানীর বিয়ে হয়।
জেলা শহর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত দিঘাপাতিয়া রাজবাড়ি, যা উত্তরা গণভবন নামে পরিচিত। নাটোরের রানী ভবানী তাঁর নায়েব দয়ারামের উপর সন্তুষ্ট হয়ে দিঘাপাতিয়া পরগনা উপহার দেন। এখানে তিনি গড়েন বেশ কটি সুরম্য প্রাসাদ। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে সেগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। পরে তার উত্তরসূরি প্রমোদনাথ রায় নতুন করে এখানে কয়েকটি প্রাসাদ নির্মাণ করেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত করার পর ১৯৫২ সালে দিঘাপাতিয়া শেষ রাজা পতিভা নাথ সপরিবারে ভারত চলে যায়। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত রাজপ্রাসাদটি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকার পর ১৯৬৬ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের নজরে আসে এবং এর সংস্কার করা হয়। ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার এটিকে ব্যবহার করছে উত্তরা গণভবন হিসেবে। প্রায় ৪৩ একর জায়গাজুড়ে চারদিকে লেক ও প্রাচীর বেষ্টিত এ রাজ বাড়িটিতে ছোটবড় ১২টি সুরম্য ভবন আছে। ভেতরে আছে ইতালি থেকে সংগৃহীত ভাস্কর্য সজ্জিত বাগান। উত্তরা গণভবনের প্রবেশ পথে রয়েছে চার তলাবিশিষ্ট পিরামিড আকৃতি প্রবেশদ্বার। আর এর চূড়ায় রয়েছে বিলেতের কোক অ্যান্ড টেলভি কোম্পানির শতবর্ষী প্রাচীন ঘণ্টা ঘড়ি।
দেশের সবচেয়ে বড় বিল চলনবিলের একটি অংশ পড়েছে নাটোরে। জেলার সিংড়া উপজেলায় রয়েছে চলনবিলের বড় একটি অংশ। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে বনপাড়া পর্যন্ত দীর্ঘ সড়ক তৈরি হয়েছে চলনবিলের ওপর দিয়েই। শীতে এসব বিলের পানি শুকিয়ে গেলেও বর্ষায় থাকে পরিপূর্ণ। সড়কের দুপাশে এ সময় যেদিকে চোখ যায় শুধু অথৈ জলরাশি। নিজস্ব গাড়িতে গেলে যাত্রাপথেই চলনবিলের সৌন্দর্য উপভোগ করা সম্ভব।
জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর গ্রামে আছে চলনবিল জাদুঘর। স্থানীয় শিক্ষক সব্দুল হামিদ ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় নিজ বাড়িতে ১৯৭৮ সালে গড়ে তুলেছেন বিচিত্র এ জাদুঘর। চলনবিলে প্রাপ্ত নানান নিদর্শন, মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম ছাড়াও এখানে আছে অনেক দূর্লভ সংগ্রহ। নাটোর থেকে বাসে গুরুদাসপুর উপজেলায় এসে সেখান থেকে নদী পার হয়ে রিকশায় আসা যাবে খুবজিপুর গ্রামের এ জাদুঘরে ও শনিবার জদুঘরটি বন্ধ থাকে।
জেলা শহর থেক প্রায় আট কিলোমিটার দূরে নলডাঙ্গা উপজেলায় আছে হালতি বিল। প্রায় ৪৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ বিলটি দেশের সবচেয়ে গভীর বিল। প্রায় বার মিটার গভীর এ বিলে সারা বছরই পানি থাকে। তবে বর্ষায় পানির পরিমাণ বেড়ে যায় অনেক বেশি।
নাটোর গেলে এখানকার কাঁচাগোল্লার স্বাদ নিতে ভুলবেন না। শহরের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে পাওয়া যাবে মুখরোচক এ মিষ্টান্নটি। ছানাকে চিনির ঘন সিরায় ডুবিয়ে বিশেষভাবে পাক দেয়ার পর ছেঁকে নেয়া একধরনের মিষ্টি হল নাটোরের বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা।