অবসর সময়ে ভ্রমণ করুন ও দেশ সম্পর্কে জানুন - পর্যটনবিডি.কম
Description AboutTourism or Parjatan Place of Bogra
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুরিষ্ট বা পর্যটক বাগেরহাট জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
শহরের সাতমাথা মোড় থেকে কিছুটা দক্ষিণে শিল্পী দুলাল গড়ে তুলেছিলেন কারুপল্লী। এখানে আছে আদিম মানুষের আজব গুহা। আদিম মানুষের গুহাবাসের চিত্র সম্পর্কে সম্যক ধারণা মিলবে এখানে। সামনেই কৃত্রিম চিড়িয়াখানায় আছে নানান পাথূরে জীবজন্তু।
কারুপল্লীর দক্ষিণে পাশেই মোহাম্মদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম। তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নবাব মোহাম্মদ আলীর এ বাড়িটি এখন রূপান্তর করা হয়েছে জাদুঘর ও শিশুপার্ক। বাড়ির চত্বরে রয়েছে শিশুপার্কের নানান রাইড যেমন-মিনি ট্রেন, ফাইটার রাইড, মেরি গো রাউন্ড, ওয়ান্ডার চেয়ার, থ্রিডি সিনেমা ইত্যাদি। এ ছাড়া নানান ভাস্কর্যেও শোভিত পুরো বাড়ির চত্বর। এ ছাড়া নবাবদের পুরোনো বাড়িটিকে রূপ দেয়া হয়েছে যাদুঘরে। নবাবদের ব্যবহৃত নানান দ্রব্যাদি প্রদর্শিত হচ্ছে এ জাদুঘরে। প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে মোহাম্মদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম।
বগুড়ার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান হল মহাস্থানগড়। বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার উত্তরে করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত এ জায়গাটি। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের এক দুর্গনগরী এই মহাস্থানগড়। এককালে মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন রাজাদের রাজধানী ছিল এখানে। এখন শুধু সেগুলোর ধ্বংসাবশেষ নীরবে দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের নীরব সাক্ষী হয়ে। এখানে এখনো আছে ৫০০০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৪৫০০ ফুট প্রস্থের সেই প্রাচীন নগরীর দেয়াল। দেয়ালের ভেতরে রয়েছে জীয়ৎকুণ্ড, প্রাচীন মসজিদ সহ নানান নিদর্শন।
এ অঞ্চলের জনগণকে রাজা পরশুরামের অত্যাচার থেকে মুক্ত করতে আফগানিস্তানের অন্তর্গত বলখ প্রদেশ থেকে শাহ সুলতান বলখী (র.) এ এলাকায় আগমন করেন। ১২০৫-১২২০ খ্রিস্টাব্দে পরশুরামের সঙ্গে তাঁর যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পরশুরাম পরাজিত এবং নিহত হয়।
মহাস্থানগড়ের পূর্ব দিকে করতোয়া নদীর তীরে রয়েছে শীলা দেবীর ঘাট। শীলা দেবী ছিলেন পরশুরামের ভগ্নি। যুদ্ধের সময় আত্মশুদ্ধির জন্য এখানেই তিনি আত্মহুতি দিয়েছিলেন।
মহাস্থানগড় থেকে সামান্য উত্তরে করতোয়া নদীর বাকে অবস্থিত একটি প্রত্নস্থল এটি। এটি মূলত একটি প্রাচীন মন্দির। খ্রিস্টীয় ১২শ-১৩শ শতকে রচিত সংস্কৃত গ্রন্থ ‘করতোয়া মহাত্নন’-এ মন্দিরটির কথা উল্লেখ আছে।
এখানে সর্বপ্রথম ১৯২৮-২৯ সালে এবং পরবর্তী সময়ে ১৯৬০ সালে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে খ্রিস্ট পূর্ব ২য় শতক থেকে শুরু করে বিভিন্ন যুগের নানান নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে।
বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৮ কিমি. দূরে শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত এ প্রত্নস্থলটির আরেক নাম নরপতির ধাপ। খননের ফলে এখনে দুটি মধ্যম আকৃতির সংঘারাম ও একটি মন্দিরসহ আরো অনেক নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়। অপেক্ষাকৃত ছোট সংঘারামটির আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৪৯ মিটার এবং পূর্ব-পশ্চিমে ৪৬ মিটার। এর চার বাহুতে ভিক্ষুদের বসবাসের জন্য ২৬টি কক্ষ এবং কক্ষগুলোর সামনে চারপাশে ঘোরানো বারান্দা এবং পূর্ব বাহুর কেন্দ্রস্থলে প্রবেশপথ রয়েছে। বড়িটিতে ৩০টি ভিক্ষু কক্ষ এবং দক্ষিণ বাহুর কেন্দ্রস্থলে প্রবেশপথ রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে খননের ফলে এখন থেকে প্রায় ৮০০টি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে।
বগুড়া শহর থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে এবং মহস্থানগড় থেকে দুই কিলোমিটার দক্ষিণে গোকুল গ্রামে অবস্থিত এ প্রত্নস্থলটি অনেকেই জানেন বেহুলার বাসরঘর নামে। ঐতিহাসিকদের মতে এটি আনুমানিক সপ্তম শতাব্দীর থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে নির্মিত। ইট নির্মিত এ স্তূপটি পূর্ব-পশ্চিমে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ এবং তিনকোণবিশিষ্ট। খননের ফলে এ স্থাপনাটিতে ১৭২টি কক্ষ আবিষ্কৃত হয়েছে।
মহাস্থানগড় থেকে সামান্য উত্তরে গোবিন্দ ভিটার ঠিক বিপরীত দিকে অবস্থিত মহাস্থানগড় জাদুঘরটি প্রতিষ্টিত হয়েছে ১৯৬৭ সালে। এ অঞ্চলে প্রাপ্ত নানান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষিত আছে এ জাদুঘরটিতে। এ জাদুঘরের গ্রীষ্মকালীন সময়সূচি হল বেলা ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত। দুপুর ১ টা থেকে ৩০ মিনিট মধ্যাহ্ন বিরতি। আর শীতকালীন সময়সূচি হল সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা। দুপুর ১ টা থেকে ৩০ মিনিট মধ্যাহ্ন বিরতি। মহাস্থানগড় জাদুঘর সপ্তাহের রোববার পূর্ণদিবস, সোমবার অর্ধদিবস এবং সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বন্ধ থাকে।