অবসর সময়ে ভ্রমণ করুন ও দেশ সম্পর্কে জানুন - পর্যটনবিডি.কম
Description AboutTourism or Parjatan Place of Patuakhali
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুরিষ্ট বা পর্যটক পটুয়াখালী জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
জেলার মির্জাগঞ্জের মসজিদ বাড়ি গ্রামে আছে প্রাচীন কীর্তি মসজিদ বাড়ি মসজিদ। সুলতান মোবারক শাহের রাজত্বকালে খান-ই-মোয়াজ্জেম উজিয়াল খান ১৪৬৫ সালে এ মসজিদ নির্মাণ করেন। এক গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটিতে এখনো নামাজ অনুষ্টিত হয়। এ ছাড়া মির্জাগঞ্জে রয়েছে এ অঞ্চলের আধ্যাত্মিক ব্যক্তি ইয়ার উদ্দীন খলীফার সমাধি।
জেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে দশমিনায় রয়েছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯৭ সালে পূর্ববর্তী পটুয়াখালী কৃষি কলেজ কে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর করা হয়।
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে সাগরকন্যা খ্যাত মনোরম একটি ভ্রমণ স্বর্গ কুয়াকাটা। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার অন্তর্গত লতাচাপালী ইউনিয়নে অসাধারণ এ সমুদ্রসৈকতটির অবস্থান। কুয়াকাটার ঠিক পূর্বেই রয়েছে গঙ্গামতির বা গজমতির সংরক্ষিত বনাঞ্চল, পশ্চিমে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল, উত্তরে এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মাছের বাণিজ্য কেন্দ্র আলীপুর। সাগরের বুকে এখান থেকেই সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য দেখা যায় বলে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের বিবেচনায় দেশের অন্যান্য সমুদ্র সৈকত থেকে এর গুরুত্ব অনেকে বেশি।
কুয়াকাটার নামকরণ নিয়ে রয়েছে মজার ইতিহাস। ১৭৮৪ সালে বর্মী রাজা রাখাইনদের মাতৃভূমি আরাকান দখল করলে বহু রাখাইন আরাকান ছেড়ে নৌকাযোগে অজানার উদ্দেশে বেড়িয়ে পড়ে। চলতে চলতে তারা বঙ্গোপসাগারের তীরের রাঙ্গাবালি দ্বীপ খুঁজে পেয়ে সেখানে বসতি স্থাপন করে। সাগরের লোনা পানি ব্যবহারের অনুপযোগী বলে মিষ্টি পানির জন্য তারা এখানে একটি কূপ খনন করে এবং এ স্থানের নাম দেয় কুয়াকাটা।
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতকে বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন সৈকত বলা হয়। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এ জায়গা থেকেই সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। তবে সেটা সৈকতের দুই প্রান্ত থেকে। ভালোভাবে সূর্যোদয় দেখা যায় সৈকতের গঙ্গামতির বাঁক থেকে আর সূর্যাস্ত দেখা যায় পশ্চিম সৈকত থেকে। এ সৈকতের দৈর্ঘ্য প্রায় আঠার কিমি. । পুরো সৈকত ঘেঁষেই রয়েছে বিস্তীর্ণ নারিকেল বাগান।
সমুদ্রসৈকতের পূর্ব প্রান্তে রয়েছে গঙ্গামতির খাল। এর পরেই গঙ্গামতির সংরক্ষিত বনাঞ্চল। কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের একেবারে পশ্চিম প্রান্তে আছে জেলেপল্লী। মাছের শুঁটকি তৈরির বিশাল একটি এলাকাও আছে এখানে। এ ছাড়া পুরো সৈকতজুড়েই সারা বছর দেখা মিলবে মাছ শিকারিদের বিভিন্ন কৌশলে মাছ ধরার দৃশ্য। কুয়াকাটার পুরো সৈকতে বেড়ানোর জন্য রয়েছে মোটরসাইকেলের ব্যবস্থা। একটি সাইকেলে দুজন ভ্রমণ করা যায়।
কুয়াকাটা নামকরণের উৎস প্রাচীন সেই কুয়াটি এখানো আছে। তবে অদূরদর্শী কুরুচিকর সংস্কারের ফলে এর সৌন্দর্য এবং প্রাচীন আদল নষ্ট হয়ে গেছে। কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের কাছেই রাখাইন আদিবাসীদের বাসস্থল কেরানিপাড়ার শুরুতেই বৌদ্ধ মন্দিরের সামনে রয়েছে এই কুয়াটি।
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের পশ্চিম দিকে বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে শুঁটকি পল্লী। এখানে গেলে দেখা যাবে ছেলেদের মাছ শুকানোর নানান কৌশল। কম দামে ভালো মানে শুঁটকিও কেনা যাবে এখান থেকে।
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের পূর্ব দিকের শেষ প্রান্তে গজমতির জঙ্গল ছাড়িয়ে আরো সামনে গেলে রয়েছে লাল কাঁকড়ার দ্বীপ। হাজার হাজার লাল কাঁকড়ার বিচরণ দেখা যায় ছোট্ট এ দ্বীপে। ভ্রমণ মৌসুমে (অক্টোবর-মার্চ)কুয়াকাটা সৈকত থেকে স্প্রিডবোট যায় ক্রাব আইস্যান্ডে।
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের পশ্চিম প্রান্তে নদী পার হলেই সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। এরই নাম ফাতরার বন। এ জাইগাটি অবিকল সুন্দরবনের মতো হলেও হিংস্র কোনো বন্যপ্রাণী নেই বললেই চলে। বনমোরগ, বানর আর বিভিন্নরকম পাখিই এই বনে বেশি দেখা যায়। খুবই কম পরিমাণে দেখা মিলে বন্যশূকরের। কুয়াকাটা থেকে ফাতরার বনে যেতে হলে লাগবে ইঞ্জিনচালিত নৌকা।
সীমা বৌদ্ধ মন্দির
কুয়াকাটার প্রাচীন কুয়াটির সামনেই রয়েছে প্রাচীন একটি মন্দির, নাম সীমা বৌদ্ধ মন্দির। প্রাচীন এই মন্দিরে রয়েছে প্রায় ৩৭ মন ওজনের অষ্ট ধাতুর তৈরি ধ্যানমগ্ন বুদ্ধের মুর্
কেরানিপাড়া
সীমা রৌদ্ধ মন্দিরের সামনে থেকেই শুরু হয়েছে রাখাইন আদিবাসীদের পল্লী কেরানিপাড়া। এখানকার রাখাইন নারীদের প্রধান কাজ কাপড় বুনন। এদের তৈরি শীতের চাদর বেশ আকর্ষণীয়।
কালীপুর বন্দর
কুয়াকাটা থেকে প্রায় চার কিলোমিটার উত্তরে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বড় একটি মাছ ব্যবসা কেন্দ্র আলীপুর। এ বন্দর থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রলার বঙ্গোপসাগরে যায় মাছ ধরতে। আলীপুর বন্দর ঘুরে দেখতে পারেন বিভিন্নরকম সামুদ্রিক মাছের বিশাল আয়োজন।
মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দির
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত থেকে প্রায় আট কিমি. পূর্বে রাখাইন আদিবাসীদের বাসস্থল মিশ্রিপাড়ায় রয়েছে আরেকটি বৌদ্ধ মন্দির। এ মন্দিরেই রয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বুদ্ধমূর্তি। এখান থেকে কিছু দূরে আমখোলা পাড়ায় রয়েছে এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় রাখাইন বসতি।
গঙ্গামতির জঙ্গল
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত পূর্ব দিকে শেষ হয়েছে গঙ্গামতির খালে গিয়ে। আর এখান থেকেই শুরু হয়েছে গঙ্গামতির বাঁ গজমতির জমগল। বিভিন্নরকম গাছপালা ছাড়াও এ জঙ্গলে দেখা মিলতে পারে বনমোরগ, বানর ও নানারকম পাখির।