অবসর সময়ে ভ্রমণ করুন ও দেশ সম্পর্কে জানুন - পর্যটনবিডি.কম
Description AboutTourism or Parjatan Place of Manikganj
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুরিষ্ট বা পর্যটক মানিকগঞ্জ জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
সুরম্য এ জমিদার বাড়িটি জেলার সাটুরিয়ায়।বালিয়াটির জমিদাররা আঠার শতকের প্রথম ভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত প্রায় দুইশ বছরে এ বাড়িসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তৈরি করেন।আঠার শতকের মধ্যভাগে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি নিমার্ণ করেন জমিদার গোবিন্দরাম শাহ্। যিনি লবণ ব্যবসা করতেন।তাঁর উত্তরাধিকারীরা পরবর্তী সময়ে এখানে একে একে নিমার্ণ করেন আরো বেশকটি স্থাপনা। এখানে বিভিন্ন সময়ে নিমির্ত বাড়িগুলো পূর্ববাড়ি,পশ্চিমবাড়ি,উত্তরবাড়ি,মধ্যবাড়ি এবং গোলাবাড়ি নামে পরিচিত ছিল।
সবচেয়ে আগে নিমির্ত অট্টালিকাটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেলেও বাকি চারটি টিকে আছে এখনো। ভবনগুলোর সামনে নানারকম কারুকাজের নিদর্শন আর স্ট্যাচু এখানে বিদ্যামান। জমিদারবাড়ির বিশাল প্রাঙ্গণ উঁচু দেয়াল। আছে চারটি সিংহমূর্তি বসানো চারটি প্রবেশ পথ। বিশ একরের কিছু বেশি জমির ওপর নিমির্ত এ জমিদারবাড়িতে রয়েছে ছোট বড় দুশোর বেশি ঘর। পেছনের দিকে আছে বড় একটি পুকুর। শান বাধাঁনো ছয়টি ঘাট আছে পুকুরের চারপাশে। পুকুরের চারপাশের সারি বাঁধা ঘরগুলো ছিল পরিচালক, প্রহরী ও অন্য কর্মচারীদের থাকার জন্য।
সুলতানি আমলের নিদর্শন মাচাইন মসজিদ। মাচাইন গ্রামের নামে এর নামকরণ হয়েছে। জনশ্রুতি আছে, এখানে শাহ্ রুস্তম নামে একজন দরবেশ বাঁশের মাচার বসে ধ্যানমগ্ন থাকতেন। মসজিদের পাশেই তাঁর কবর।
বালিয়াটি জমিদার বাড়িরপাশেই রয়েছে শর্তবর্ষ প্রাচীন স্থানীয় রামকৃষ্ণ মিশন। ১৯১০ সালে বালিয়াটি জনৈক শ্রী রাধিকাচরণ চৌধুরী রামকৃষ্ণ মিশন দেবাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এ দেবাশ্রমে আছে উপাসনালয় এবং একটি গ্রন্থাগার। ভারতের কেন্দ্রীয় রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃক স্বীকৃতপ্রাপ্ত বাংলাদেশের দশটি মিশনের অন্যতম এটি।
রামকৃষ্ণ মিশনের সামনেই বিখ্যাত গৌরাঙ্গ মঠ। স্থানীয় জমিদার মনমোহন রায়চৌধুরী ১৯২৫ সালে তাঁর সহধর্মিণী ইন্দুবালা এবং কন্যা সুনীতিবালা স্মৃতির উদ্দেশ্য এ প্রতিষ্ঠা করেন। বলা হয়,এটি ভারতের বিখ্যাত গদাই গৌরাঙ্গ মঠের স্বীকৃত প্রাপ্ত শাখামঠ পাথরের তৈরি গদাই গৌরাঙ্গ মূর্তিটি এখন আর মন্দরে নেই। ৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী পাথরের তৈরি এ মূর্তিটি ধ্বংস করে ফেলে।
বালিয়াটি জমিদারবাড়ির কাছেই ঈশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়। জমিদার ঈশ্বরচন্দ্র রায়ের নামানুসারে এ স্কুলের নামকরণ করা হয়েছে। ১৯১৫ -১৬ সালে ঈশ্বরচন্দ্রের পুত্র হরেন্দ্রকুমার রায়চৌধুরী স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন।হরেন্দ্রকুমার স্কুলটির পাকা ভবন নিমার্ণ করতে তখনকার দিনে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা ব্যয় করেছিলেন।
মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলায় অবস্থিত এ প্রাচীন জমিদারবাড়ি হেম শঙ্কর রায়চৌধুরী এবং জয়শঙ্কর রায়চৌধুরী নামে দুই ভাই সুরম্য এ বাড়িটিতে থেকে জমিদারি পরিচালনা করতেন। বর্তমানে বাড়িটি ধ্বংসের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছে।বাড়িটি ৫৫টি ঘর এখানো কোনোমতে টিকে আছে।জমিদারবাড়ি প্রাঙ্গনেই রয়েছে নবরত্ন মন্দির। মন্দিরটির অবস্থাও জরাজীর্ণ।
জেলা সদর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার পূর্বে মত্ত গ্রামে অবস্থিত মত্তের মঠ। এক সময়ের প্রভাবশালী জমিদার রামকৃষ্ণ সেন এবং প্রসন্ন কুমার সেন এ মঠ প্রতিষ্ঠা করেন বলে ধারণা করা হয়।
মানিকগঞ্জ শহরে অবস্থিত শ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়ির নিমার্ণকাল ১৮৯৫ -৯৬ সাল। প্রতি বছর রথ উপলক্ষে এখানে লোকজ মেলা বসে।এছাড়া নিয়মিত ধর্মসভা, নামকীর্তন, যাত্রাপালাসহ অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।
মানিকগঞ্জের হাজারীগুড়ের সুনাম বহুকালের। জেলার হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা গ্রামের মিনহাজ উদ্দিন হাজারীর উদ্ভাবিত সাদারঙের এ খেজুর গুড়ের স্বাদ অতুলনীয়। মিনহাজ উদ্দিন হাজারীর পরিবার সহ গ্রামের বেশ কয়েকজন কারিগর ধরে রেখেছেন হাজারী গুড়ের ঐহিত্য।
নারায়ণ সাধুর আশ্রম
মত্ত গ্রামেরই আরেকটি পুরাকীর্তি নারায়ণ সাধুর আশ্রম।নারায়ণ নামে এক সাধু উড়িষ্যা থেকে একটি বৃহৎ প্রস্তর খণ্ড এনে এখানে প্রতিষ্ঠা করেন।১৩৪৮ সালে আশ্রমটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।