অবসর সময়ে ভ্রমণ করুন ও দেশ সম্পর্কে জানুন - পর্যটনবিডি.কম
Description AboutTourism or Parjatan Place of Bandarban
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুরিষ্ট বা পর্যটক বান্দরবান জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
বান্দরবান শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে বান্দরবান-চন্দ্রঘোনা সড়কের পুলপাড়ায় রয়েছে জাদির পাহাড়। এ পাহাড়ের চূড়ায় আছে আকর্ষণীয় একটি বৌদ্ধ মন্দির। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের এ স্বর্ণ মন্দিরের নাম বুদ্ধধাতু জাদি। নিয়মিত এ মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে আরেকটি পাহাড়ের চূড়ায় আছে দেবতার পুকুর। পুকুরে নামতে হয় খালি পায়ে। শহরের সাঙ্গু ব্রিজ থেকে বাস, রিক্সা ও টেম্পুতে আসা যায় এখানে।
বান্দরবান শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কের পাশেই রয়েছে সুন্দর এ জায়গাটি। বিশাল এলাকাজুড়ে এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি লেক। লেকের ওপার থেকে ওপারে যাওয়ার জন্য আছে ঝুলন্ত ব্রিজ। ওপারেই একটি চিড়িয়াখানা ও মিনি সাফারি পার্ক। মেঘলা লেকে নৌভ্রমণও করতে পারেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে এ পর্যটন কমপ্লেক্স। এখানে একটি চারটি কক্ষ বিশিষ্টবিশ্রামাগারও আছে।
বান্দরবান শহরের কাছে সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের নাম নীলাচল। শহর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে টাইগার পাড়ায় এ পাহাড়টির উচ্চতা প্রায় এক হাজার ফুট। এখানে দাঁড়িয়ে বান্দরবান শহরসহ দূর দূরান্তের অনেক জায়গার সৌন্দর্য দেখা যায়। আঁকা-বাঁকা পথ পেরিয়ে এখানকার পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে হবে। পশ্চিম দিগন্তে সূর্যাস্তের দৃশ্য এখান থেকে দেখা যায় খুব ভালভাবে। বান্দরবান জেলা প্রশাসন পরিচালিত একটি রেস্তোরাঁ ও একটি বিশ্রামাগার আছে এখানে। নিজস্ব বাহন না থাকলে শহর থেকে চাঁদের গাড়ি বিজার্ভ করে নিতে হবে।
বান্দরবান শহর থেকে চিম্বুক যাওয়ার পথে মনোরম একটি জায়গা শৈলপ্রপাত। শহর থেকে এর দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। এখানকার হিমশীতল ঝরনাধারা বছর জুড়েই বহমান। পাথুরে পথ শৈলপ্রপাতের ঝরনার জল বয়ে চলে অবিরাম। এ পাথুরে পথ অনেকটা সমতল। শৈল প্রপাতের পাশেই রয়েছে স্থানীয় আদিবাসীদের একটি ভ্রাম্যমাণ বাজার। তাদের তৈরি চাদর আর পাহাড়ি ফলমুল কিনতে পারেন এ বাজারে থেকে। আর পাশেই আছে বম আদিবাসীদের একটি গ্রাম। এখানে ঘুরে দেখতে পারেন বমদের বৈচিত্র্যময় জীবনধারা।
শৈলি প্রপাত থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে রয়েছে চিম্বুক পাহাড়। চিম্বুকের দুর্গম পাহাড়ি পথ খুবই আঁকাবাঁকা। কোথাও কোথাও পথ খুবই খাড়া। চিম্বুক পাহাড়ের চূড়া চারদিকে শুধু সবুজ আর ধু ধু দিগন্ত। আকাশ পরিষ্কার থাকলে দৃষ্টিসীমা চলে যায় একেবারে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। চিম্বুক পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে একটি টেলিফোন এক্সচেঞ্জের টাওয়ার। এ জায়গার সঙ্গে বান্দরবানের সব থানার টেলিযোগাযোগ আছে। সড়ক ও জনপদের একটি বিশ্রামাগার আছে এখানে। চিম্বুকের কিছুটা সামনেই আছে আর্মি ক্যাম্প। এখানকার ক্যান্টিনে খেয়ে নিতে পারেন। আর্মির অনুমতি নিয়ে দেখে আসতে পারেন। এখান থেকে এক কিলোমিটার সামনে আরেকটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত জিয়া পুকুর। অন্যান্য সময়ে এ পুকুরে পানি না থাকলেও বর্ষায় ভরপুর থাকে।
বান্দরবান থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার দূরে উপজেলা শহর রুমা। পাহাড় খেরা ছোট্ট এ বাজারটিতে সাপ্তাহিক হাট বসে সোমবার ও বৃহস্পতিবার। রুমা বাজার থেকে এক কিলোমিটার দূরে বেথেল পাড়ায় আছে বম আদিবাসীদের বসবাস। এ ছাড়া বাজারের চারপাশেই অনেক বম পরিবারের বসবাস আছে। বান্দরবান শহর থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা, বেলা ১১টা, দুপুর ১টায়, চাঁদের গাড়ি ছাড়ে রুমার উদ্দেশ্যে। যেতে সময় লাগে প্রায় তিন ঘণ্টা। চাঁদের গাড়ি থেকে রুমা ঘাটে নেমে সেখান থেকে রুমা বাজারে আসতে হবে নৌকায়। রুমা বাজারে থাকার জন্য সাধারণ মানের তিনটি হোটেল আছে। হোটেল কেওক্রাডং, হোটেল হিলটন ও মং গেস্ট হাউস।
রুমা উপজেলায় মনোরম একটি প্রাকৃতিক ঝরনা রিজুক। সাঙ্গু নদীর পাড়ে প্রায় তিনশ ফুট উঁচু থেকে এ ঝরনায় সারা বছরই পানি প্রবাহিত থাকে। স্থানীয়রা একে বলে বী স্বং স্বং। রুমা বাজার থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় রিজুক ঝরনা যাওয়া যায়।
বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচুতে যে লেক তার নামই বগা লেক। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে এ লেকের উচ্চতা প্রায় সাড়ে তিন হাজার ফুট। প্রায় ১৫ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এ লেকের পানি দূর থেকে মনে হয় গাঢ় নীল। বগা লেকে যেতে হবে রুমা বাজার থেকে। বৃষ্টি না থাকলে এখানে যেতে মাঝে মধ্যে জিপ পাওয়া যায়। অন্যথায় একমাত্র উপায় পায়ে হাঁটা। পায়ে হেঁটে গেলে একটু কষ্ট হলেও দেখা যায় অনেক কিছু। আর হেঁটে লাগবে প্রায় চার ঘণ্টা। এখানে রাতেও থাকতে পারেন। থাকার জন্য আছে ইযং বম এসোসিয়েশনের রেস্ট হাউস।
বগা লেক থেকে কেওক্রাডং- এর পথে প্রায় দুই কিলোমিটার গেলে হাতের বাম পাশে পড়বে দুই উৎসমুখের এ ঝরনাটি। কোয়েক ধাপে এ জলপ্রপাতটি প্রবাহিত হবার কারণে এটির সৌন্দর্য আরো বেশি।
রুমা বাজার থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে কেওক্রাডং। তাজিংডং চিহ্নিত হবার আগে এটি ছিল দেশের সবচেয়ে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ। এর উচ্চতা প্রায় ৪৩৩২ ফুট। বগা লেক থেকে চার কিলোমিটাড় দূরে সাইকতপাড়া ও দার্জিলিং পাড়া। এ দুটি পাড়াতেই বমদের বসবাস। এখান থেকে কেওক্রাডাং মাত্র এক কিলোমিটার দূরে।