অবসর সময়ে ভ্রমণ করুন ও দেশ সম্পর্কে জানুন - পর্যটনবিডি.কম
Description About Tourism or Parjatan Place of Rangamati
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুরিষ্ট বা পর্যটক রাংগামাটি জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
উপজাতীয় জাদুঘর থেকে কাছেই রাজ বন বিহার। এ অঞ্চলের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান এটি। এখানে আছে একটি প্রার্থনালয়, একটি প্যাগোডা, বনভান্তের (বৌদ্ধ ভিক্ষু) আবাস স্থল ও বনভান্তের ভোজনাল্য। প্রতি শুক্রবার ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে এখানে চলে প্রার্থনা। রাজ বন বিহারে দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারেন কাপ্তাই লেকের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য।
রাঙ্গামাটি শহরের শেষপ্রান্তে রিজার্ভ বাজার ছাড়িয়ে আরো প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে রয়েছে পর্যটন কমপ্লেক্স। এই কমপ্লেক্সের ভেতরই রয়েছে সবার চেনা ঝুলন্ত সেতুটি। সেতু পেরিয়ে সামনের পাহাড়ে উঠলে কাপ্তাই লেকের রড় অংশ দেখা যায়। এখান থেকে কাপ্তাই লেকে নৌ ভ্রমণও করা যায়। এখান থেকে কাপ্তাই লেকে নৌ ভ্রমণও করা যায়। নৌ ভ্রমণের অন্য এখানে আছে নানারকম বাহন। দশ জনের চড়ার উপযোগী ইঞ্জিন নৌকা। পাঁচজনের চড়ার উপযোগী সাম্পানও রয়েছে
১৯৬০ সালে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য কাপ্তাই বাধ নির্মাণের ফলে কর্ণফুলী হ্রদ তথা কাপ্তাই লেকের জন্ম। প্রায় ১৭২২ বর্গকিলোমিটার আওয়তনের এ লেকের স্বচ্ছ পানি আর বাঁকে বাঁকে পাহাড়ের সোন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। শহরের রিজার্ভ বাজার ঘাটে পাওয়া যায় কাপ্তাই লেকে ভ্রমণের নানারকম ইঞ্জিন নৌকা। ঝুলন্ত সেতুর কাছেও এরকম অনেক নৌকা আছে। তবে সেখানে ভাড়াটা একটু বেশিই শুনতে হবে। সারা দিনের জন্য একটি বোট ভাড়া করে সকালে চলে যাওয়া যায় শুভলং বাজার।
এখানে আর্মি ক্যাম্পের পাশ থেকে সিঁড়ি বেয়ে পাহাড়ের উপরে উঠে কাপ্তাই লেকের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। তবে এখানে বানর থেকে সাবধান। এদের বিরক্ত করা যাবে না। আর সেটা করলে ওরা কিন্তু চড়াও হতে পারে। শুভলংয়ে কিছুটা সময় কাটিয়ে ফিরতি পথের শুরুতেই হাতের ডানের শুভলং ঝরনা। ঝরনার শীতল জলে শরীরটা ভিজিয়ে নিলে ক্লান্তি দূর হবে। কাপ্তাই লেকের দু’পাশের আকাশ ছোঁয়া পাহাড়গুলোর সৌন্দর্য দেখতে দেখতে চলতে থাকুন। পথে দুপুরের খাবার সেরে নিতে পারেন টুকটুক ইকো ভিলেজ কিংবা পেদা টিংটিং এ। শুরুতেই পড়বে টুকটুক ইকো ভিলেজ। কাপ্তাই লেকের একেবারে মাঝে এই ইকো ভিলেজটির সুন্দর সুন্দর কটেজ রাত কাটানোরও ব্যবস্থা আছে। এর রেস্তোরাঁটিতেও পাওয়া যায় বিভিন্ন রকম পাহাড়ি মেন্যু।
এখান থেকে রাঙ্গামাটি শহরের দিকে আসতে সামান্য কিছু পথ এগুলেই পড়বে পেদা টিংটিং। এখানকার রেস্তোরাঁটিতেও থাকে নানারকম খাবারের সঙ্গে পাহাড়ি নানান পদের খাবার। সারা দিন কাপ্তাই লেকের এসব জায়গা ভ্রমণক রা যায় ইঞ্জিন বোটে। এ ছাড়া রাঙ্গামাটি শহর থেকে এখন প্রতিদিন শুভলং ছেড়ে যায় আধুনিক ভ্রমণতরী কেয়ারী কর্ণফুলী। প্রতিদিন সকালে ছেড়ে আবার বিকেলে ফিরে আসে। ফিরতি পথে টুকটুক ইকো ভিলেজ কিংবা পেদা টিংটিং এ থাকে বিরতি।
জেলা সদর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান। প্রায় ১৩ হাজার একর জায়গা নিয়ে বিস্তৃত এ বনের প্রধান গাছ সেগুন, জারুল, গামার, কড়ই প্রভৃতি। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রানী ও পাখির দেখা মিলবে এ বনে। বন বিভাগের দুটি বিশ্রামাগারও আছেকাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের ভেতরে
রাঙ্গামাটি শহর থেকে প্রায় ২১ কিলোমিটার দূরে লেক, পাহাড়, ঝরনাসহ নানান নৈসর্গিক উপাদান সমৃদ্ধ বরকল উপজেলা। রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজার থেকে প্রতিদিন সকালে লঞ্চ ছাড়ে বরকলের উদ্দেশ্যে। এসব লঞ্চ গিয়ে বরকল দেখে আবার সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসা সম্ভব। কাপ্তাই লেক ধরে বরকলের যাতায়াত পথটিই এ পথের সবচেয়ে বড়ো আকর্শণ। এ ছাড়া বরকলে দেখা মিলবে চাকমা, মগ, টিপরা প্রভৃতি আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় জীবনধারা।
উপজাতীয় জাদুঘর
রাঙ্গামাটি শহরের শুরুর দিকটায় রয়েছে জাতীয় জাদুঘর। এখানে রয়েছে রাঙ্গামাটিসহ পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত নানান আদিবাসীদের ব্যবহৃত বিভিন্ন সময়ের নানান সরঞ্জামাসি, পোশাক, জীবনাচরণ এবং বিভিন্ন ধরনের তথ্য। ছোট অথচ অত্যন্ত সমৃদ্ধ এ জাদুঘরটি খোলা থাকে সোম থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। শনি, রবি ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতে জাদুঘর বন্ধ থাকে। জাদুঘরে বড়দের প্রবেশ মূল্য রয়েছে।
বাঘাইছড়ি
রাঙ্গামাটি অরেক দ্রষ্টব্য স্থান বাগাইছড়ি। এখানেও যেতে হবে কাপ্তাই লেক ধরে। পুরো পথটিই একেবারে ছবির মতো। যেদিকে চোখ যাবে শুধু পাহাড় আর পাহাড়। রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজার থেকে সকালে লঞ্চ ছাড়ে বাঘাইছড়ির উদ্দেশে। যেতে সময় লাগে প্রায় ৭ ঘণ্টা। এখানে বনবিভাগের বংলা ছাড়াও সরকারি ডাকবাংলো আছে। বাঘাইছড়িতে বম, মুরং, বনজোগী প্রভৃতি আদিবাসীদের জীবন যাপন উপভোগ করা যাবে।
রাঙ্গামাটির আদিবাসী সম্প্রদায়
চাকমা, মারমা, তংচংগ্যা, ত্রিপুরা, মুরং, বম, খুমি, খেয়াং, চাক, পাংখোয়া, লুসাই প্রভৃতি আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস রাঙ্গামাটির বিভিন্ন জায়গায়। এসব আদিবাসীর নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও রীতিনীতি আছে।রাঙ্গামাটিতে বসবাসরত আদিবাসীরা তাদের নিজস্ব রীতিনীতিতে বেশ কিছু উৎসব পালন করে থাকে। এগুলো হল-
বৈসারি
পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসীর বর্ষবরণের উৎসব বৈসারি। কোনো কোনো আদিবাসীরা আগে এ উৎসব পালন করতেন বৈসুক নামে, কেউ আবার সাংগ্রাই আবার কেউ বিজু নামে। তবে পুরো পার্বত্য এলাকায় এ উৎসব এখন বৈসারি নামেই পরিচিত। বৈসুক, সাংগ্রাই আর বিজু – এই তিন নামের আদ্যাক্ষর নিয়েই বৈসারি শব্দের উৎপত্তি। পাহাড়িদের এ উৎসব মূলত হয় চৈত্রের শেষ দু’দিন এবং বৈশাখের শুরু দিনটায়।
চাকমা সম্প্রদায় এ তিন দিনকে যথাক্রমে ফূল বিজু, মূল বিজু এবং গজ্জ্যেপজ্জ্যে নামে পালন করে থাকে। মারমা সম্প্রদায় দিন তিন্টিকে যথাক্রমে পাইং ছোয়াই, সাংরাই আফ এবং সাংরাই আপ্যাইং নামে পালন করে থাকে। ত্রিপুরা সম্প্রদায় এ দিন তিনটিকে পালন করে থাকে হারি বৈসুক, বৈসুকমা এবং বিসিকাতাল নামে। ভিন্ন ভিন্ন নামে দিন তিনটি পালন করা হলেও উৎসবের রীতিনীতি বেশিরভাগই একই রকম। শুরুর দিনটায় তারা নিজ নিজ ঘর-বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে। ছেলেমেয়েরা খুব ভোরে ফুল সংগ্রহ করে ঘর সাজায়।
কিশোর-কিশোরীরা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের স্নান করায়। দ্বিতীয় দিনে সবার ঘরে নানান পদের খাবারের আয়োজন থাকে, প্রত্যেকে প্রত্যেকের ঘরে যান এ দিন। সবার ঘরেই এদিন রান্না করা হয় বিভিন্ন রকম সবজি দিয়ে বিশেষ এক পদ ‘পাজন’। আদিবাসীদের নিজস্ব সুরাও এ দিন পরিবেশন করা হয়। শেষ দিন বিহারে ধর্মানুষ্ঠানের আয়োজন থাকে। শেষ দিনে মারমা সম্প্রদায়ের বিশেষ আয়োজন হল ‘রিলং পোয়েহ্’ বা পানি খেলা। ত্রিপুরা সম্প্রদায় এদিন আয়োজন করে থাকে গড়াইয়া নৃত্যের।
রাজ পুণ্যাহ
রাজ পূণ্যাহ হল খাজনা আদায়ের অনুষ্ঠান। এ দিন রাঙ্গামাটির চাকমা রাজা তাঁর দরবারে বসে খাজনা আদায় করেন। রাজা অধীনস্ত বিভিন্ন এলাকার হেডম্যান ও কারবারীরা রাজার হতে তুলে দেন নিজ নিজ এলাকার প্রজাদের খাজনা। এ ছাড়া তারা এদিন রাজাকে নানান উপহারও দেন। রাঙ্গামাটির চাকমা সম্প্রদায়ের মধ্যে এখনো রাজপ্রথা বিদ্যমান। রঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার ১৭৭টি মৌজা নিয়ে বর্তমান চাকমা স