অবসর সময়ে ভ্রমণ করুন ও দেশ সম্পর্কে জানুন - পর্যটনবিডি.কম
Description AboutTourism or Parjatan Place of Pabna
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুরিষ্ট বা পর্যটক পাবনা জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
পাবনা শহরের উত্তর-পূর্ব দিকে কালাচাঁদ পাড়ায় অবস্থিত ইট নির্মিত প্রাচীন মন্দির। এর ওপরের পাকা ছাদ দোচালা ঘরের মতো। পাশাপাশি সংযুক্ত দুটি দোচালা ঘরের মতো এ মন্দিরটি। মন্দিরটির সামনের দিকে তিনটি প্রবেশপথ আছে। মন্দিরটির সম্মুখভাগের বাইরে সুন্দর কারুকাজ করা। জানা যায়, মন্দিরটি বেশ উঁচু একটি ভিটির ওপর নির্মিত হয়েছিল। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে তার অনেকেটা দেবে যায়। বর্তমানে এর ভিত্তি মাটি থেকে দুই ফুট উপরে আছে। মুর্শিদাবাদের নবাবের তহসিলদার ব্রজমোহন ক্রোরী কর্তৃক মন্দিরটি আঠার শতকে নির্মিত।
১৮৮৯ সালে পাবনা ইনস্টিটিউট নামে প্রতিষ্ঠিত জেলার প্রাচীনতম কলেজ। তৎকালীন ভারতের সম্রাট সপ্তম এডওয়ার্ডের স্মৃতির উদ্দেশে ১৯১১ সালে এর নাম করণ করা হয় এডওয়ার্ড কলেজ। জমিদার বনমালী রায়বাহাদুর, অধ্যাপক হেমচন্দ্র রায়, গোপালচন্দ্র লাহিড়ী, রাধিকা নাথ বসু প্রমুখের উদ্যোগে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
পাবনা উপজেলা সদর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে হেমায়েতপুরে অবস্থিত শ্রী অনুকূল ঠাকুরের আশ্রম। শ্রী অনুকূল চন্দ্র নামে একজন স্থানীয় হিন্দু ব্যক্তি তাঁর বাবা শিবচন্দ্র চক্রবর্তী এবং মা যুক্ত মহমোহনী দেবীর স্মৃতির উদ্দেশে এখানে মন্দির ও আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।
জেলা সদর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে হেমায়েতপুরে অবস্থিত দেশের একমাত্র মানসিক হাসপাতাল। ১৯৫৭ সালে পাবনার তৎকালীন সিভিল সার্জন শহরের একটি পুরোনো জমিদারবাড়িতে এ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। পরে ১৯৫৯ সালে এটি হেমায়েতপুরে স্থানান্তর করা হয়।
জেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান কার্যালয়। এখানে দেখা যাবে প্রাচীন রেল ইঞ্জিনসহ আরো অনেক কিছু। এ ছাড়া পাকশীতে আছে ব্রডগেজ রেল স্টেশন।
পাকশীতে অবস্থিত পদ্মা নদীর ওপর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রেল সেতু। ১৯১০ সালে শুরু করে এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯১২ সালে। ১৯১৫ সালে জানুয়ারিতে সর্বপ্রথম পরীক্ষামূলকভাবে এ সেতুতে রেল চলে। পরে ১৯১৫ সালের ৪ মার্চ লর্ড হার্ডিঞ্জ সেতুটির উদ্বোধন করেন। প্রায় ১.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ইস্পাত নির্মিত এ ব্রিজটি তৈরিতে তৎকালীন সময়ে ৩ কোটি ৫১ লাখ ৩২ হাজার ১৬৫ টাকা ব্যয় হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকবাহিনীর মর্টারের আঘাতে এর বারতম স্প্যানটি ভেঙে নদীতে পড়ে যায়।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশাপাশি প্রায় তিনশ মিটার দূরত্বে পদ্মা নদীর ওপরে অবস্থিত লালন শাহ সেতু। প্রায় ১.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৮.১ মিটার প্রস্থের এ সেতু ২০০৪ সালে চালু হয়। বাউলসম্রাট ফকির লালন শাহর নামে এর নামকরণ করা হয়। ভারতে নদীর ওপর বাঁধ দেয়ায় এবং নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় শীতে এ সেতুর নিচে পানির পরিবর্তে থাকে ধু ধু বালুচর। বর্ষায় আবার প্রমত্তা পদ্মা। ফলে এ জায়গাটিতে এ দু সময়েই ভ্রমণে মিলবে ভিন্ন স্বাদ।
পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলা সদর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে চাটমোহর গ্রামে অবস্থিত প্রাচীন মসজিদ। চাটমোহর রেল স্টেশন থেকে দুই কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এ মসজিদটি। রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে সংরক্ষিত মসজিদটির শিলালিপি থেকে জানা যায়, সুলতান আবুল ফাতেহ মোহাম্মদ মামুস খানের রাজত্বকালে তুয়ী মোহাম্মদ খান কাশকালের ছেলে খান মোহাম্মদ এ মসজিদটি ১৫৮১-৮২ সালে নির্মাণ করেন।
চাটমোহর সদর থেকে প্রায় উনিশ কিলোমিটার দূরে হন্ডিয়ালে অবস্থিত জগন্নাথ মন্দির। ইট নির্মিত এ মন্দিরে একটি প্রবেশপথ আছে। প্রবেশপথের চারপাশ বেশ কারুকার্যমন্ডিত। মন্দিরটি চারকোনাকারে ক্রমশ সুরু হয়ে ওপরে উঠে গেছে। মন্দিরের শিলালিপি থেকে জানা যায়, ১৫৯০ সালে জনৈক ভবানী প্রসাদ কর্তৃক মন্দিরটি সংস্কার করা হয়। ধারণা করা হয় এরও প্রায় একশ বছর আগে পঞ্চদশ শতকে মন্দিরটি নির্মিত।
চাটমোহর উপজেলা সদর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় বিল চলন বিল। চলনবিলের প্রধান দুটি অংশ যথাক্রমে ১৮ ও ১৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের কুরলিয়া ও দিক্ষি বিল চাটমোহর অবস্থিত। শীতে এসব বিলের পানি শুকিয়ে গেলেও বর্ষায় থাকে পরিপূর্ণ। এ সময়ে বিলে বেড়াতে ভালো লাগবে সবার। জেলা সদর থেকে বাসে চাটমোহর এসে সেখান থেকে রিকশায় আসা যায় চলনবিলে।