Description AboutTourism or Parjatan Place of Bagerhat
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুারিষ্ট বা পর্যটক বাগেরহাট জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
ঠাকুর দিঘির পশ্চিম পাশে বয়েছে এক গম্বুজবিশিষ্ট ছোট একটি মসজিদ। লাল ইটে তৈরি বর্গাকার এ মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৬ মিটার। মসজিদের বাইরে জিন্দাপীরের সমাধি ছাড়াও আরো কয়েকটি পুরোনো সমাধি রয়েছে।
ঠাকুর দিঘির পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত এ মসজিদ। ইটের তৈরি এ মসজিদের উপরে নয়টি গম্বুজ রয়েছে। পুরো মসজিদের গায়ে পোড়ামাটির কারুকাজখচিত। মসজিদের ভেতরে একটি পিলারে বড় একটি গর্তকে অনেকই বিশ্বাস করেন খানজাহান আলীর (র.) বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ হিসেবে।
ঠাকুর দিঘি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে রয়েছে বিশ্ব এতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ। বিশাল এ মসজিদটি ইটদিয়ে নির্মিত। নাম ষাটগম্বুজ হলেও মসজিদটিতে মূলত একাশিটি গম্বুজ আছে মসজিদের ছাদে ৭৭টি এবং চারকোণের টাওয়ার দিয়ে ৪টি। তবে মসজিদের ভেতরের ষাটটি স্তম্ভ থাকার কারণে এর নাম হতে পারে ষাটগম্বুজ। মসজিদের ভেতরের স্তম্ভগুলো পাথরের তৈরি। সংরক্ষণের জন্য স্তম্ভগুলোর পাথর চুন-সুরকির প্রলেপে ঢেকে নেয়া হয়েছে। তবে উত্তর দিকের একটি স্তম্ভ খালি রাখা হয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য। খানজাহানের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য স্থাপত্যকীর্তি এটি। ধারণা করা হয় ষাটগম্বুজ মসজিদটি তিনি নির্মাণ করেছিলেন ১৪৫০ খ্রিস্টাব্দে।
ষাটগম্বুজ মসজিদের পাশেই ইউনেস্কো ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাগেরহাট জাদুঘর। ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ জাদুঘরে এ অঞ্চলে প্রাপ্ত নানান প্রাচীন নিদর্শন প্রদর্শিত হচ্ছে। ষাটগম্বুজ মসজিদ প্রত্নস্থল ও জাদুঘরে প্রবেশমূল্য দেশী রয়েছে।
ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে প্রায় তিনশ মিটার দূরে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে একটি স্থাপনার ভিত্তি আবিষ্কৃত হয়েছে। ধারণা করা হয় এটি হজরত খানজাহান আলীর বসতভিটা। ২০০৮-০৯ সালে খননের ফলে এ জায়গায় একটি ভবনের ভিত্তি, পিলার, মেঝে আবিষ্কৃত হয়েছে।
রণবিজয়পুর গ্রামের ষাটগম্বুজ সড়কে এ মসজিদটি অবস্থিত। ফকিরবাড়ি মসজিদ নামেও একে অনেকেই জানেন। স্থাপত্যশৈলীর বিচারে এটিকে হজরত খানজাহান আলীর (র.) সময়কালে (১৪৫৯ সাল) নির্মিত বলে মনে করা হয়। ইটে তৈরি এ মসজিদটি বর্গাকারে নির্মিত এবং এক কক্ষবিশিষ্ট। উপরের দিকে একটি অর্ধবৃত্তাকার গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। মসজিদের দেয়ালগুলো বেশ পুরু। কিবলা দেয়াল ছাড়া প্রতি দেয়ালেই তিনটি করে প্রবেশপথ আছে। পূর্ব দেয়ালের তিনটি প্রবেশপথ বরাবর পশ্চিম দেয়ালে রয়েছে তিনটি মিহরাব। কেন্দ্রীয় মিহরাবটি অন্য দুটি থেকে বড়। মসজিদের বাইরে চারকোনায় চারটি মিনার রয়েছে। যেগুলো খানজাহানি স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন। পোড়ামাটির ফলকে অলঙ্কৃরণই প্রায় নিলীন হয়ে গেছে। অবশিষ্ট যা আছে তা দেখা যায় প্রবেশপথ, মিহরার, কার্নিশ এবং কোনার বুরুজগুলিতে। এসব অলঙ্করণই প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। অবশিষ্ট যা আছে তা দেখা যায় প্রবেশপথ, মিহরাব, কার্নিশ এবং কোনার বুরুজগুলিতে। এসব অলঙ্করণের মধ্যে রয়েছে গোলাপ নকশা প্যাঁচানো ফুলের নকশা ইত্যাদি। ১৯৬১ সালে এটিকে সংরক্ষিত স্থাপনা হিসেবে ঘোষণা এবং সংস্কার করা হয়। রণবিজয়পুর গ্রামের নামেই এ মসজিদের নামকরণ হয়েছে। ধারণা করা হয় এখানেই কোনো এককালে কোনো যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সে যুদ্ধে বিজয়ের স্মরণে এ জায়গার নাম হয় রণবিজয়পুর। বাইরের দিক থেকে এর আয়তন ৫৬ বর্গফুট এবং ভেতরে দিকে ৩৬ বর্গফুট। মসজিদটির প্রাচীর প্রায় ১০ ফুট চওড়া। রণবিজয়পুর মসজিদ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ।
ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ধানক্ষেতের মধ্যে এ মসজিদটি অবস্থিত।দির্ঘকাল অযত্নে পড়ে থাকার পর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এ মসজিদটির সংস্কার করেছে। বর্গাকৃতির এ মসজিদটি বাইরের দিকে লম্বাকৃতি লম্বায় প্রায় ৪০ ফুট এবং ভেতরের দিকে ২৫ ফুট। দেয়ালগুলো প্রায় ৭ ফুট চওড়া। কেন্দ্রস্থলের উপরের দিকে রয়েছে বড় একটি গম্বুজ। মসজিদের পূর্ব দেয়ালে আছে তিনটি প্রবেশপথ। আর পশ্চিম দেয়ালে প্রবেশপথগুলো বরাবর রয়েছে তিনটি মিহরাব। মাঝের মিহরাবটি অপেক্ষাকৃত বড়। প্রতিটি মিহরাবের গায়ে রয়েছে। নানা রকম ফুল ও লতাপাতার কারুকাজ। মিহরাবগুলোর নিচের অংশ মাটির ভেতরে কিছুটা দেবে গেছে। উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালে আছে একটি করে প্রবেশপথ। চুনাখোলা মসজিদে এখনো নিয়মিত নামাজ আদায় করা হয়। মসজিদটির নির্মাণকাল সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি।
ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত এক গম্বুজবিশিষ্ট একটি প্রাচীন মসজিদ। মসজিদটি সিংড়া মসজিদের অনুরূপ হলেও এর পশ্চিম দেয়ালে নিহরাবের সংখ্যা তিনটি। মসজিদটির সঠিক নির্মাণ কাল জানা যায় নি।
বাগেরহাট শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে অযোধ্যা গ্রামে অবস্থিত কোদলা মঠ। বর্গাকারে নির্মিত এ মঠটির উচ্চতা প্রায় ১৯ মিটার। এর দেয়াল প্রায় তিন মিটার পুরু। মঠের একটি শিলালিপি থেকে জানা যায় সতের শতকের গোড়ার দিকে একজন ব্রাহ্মণের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এ মঠটি নির্মাণ করা হয়। পুরো মঠটির চারপাশের দেয়াল পোড়ামাটির অলঙ্করণে শোভিত।
বাগেরহাট জেলার মংলায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মংলা। ১৯৫০ সালের ১১ ডিসেম্বর চালনা থেকে ১৮ কিলোমিটার উজানে এ বন্দরে প্রথম বিদেশী জাহাজ নোঙর করে। সমুদ্রগামী জাহাজ নোঙরের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক বলে ১৯৫৪ সালে এ বন্দর মংলায় স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘদিন এ বন্দরটি প্রায় বন্ধ থাকার পর ২০০৯ সাল থেকে আবার এখানে বিদেশী জাহাজ ভিড়েতে শুরু করেছে।