অবসর সময়ে ভ্রমণ করুন ও দেশ সম্পর্কে জানুন - পর্যটনবিডি.কম
Description AboutTourism or Parjatan Place of Bandarban
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুরিষ্ট বা পর্যটক বান্দরবান জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
কেওক্রাডং থেকে থাইকং সড়কে প্রায় চার কিলোমিটার দক্ষিণে গেলে প্রথমেই পড়বে জাদিপাঁই পাড়া। আদিবাসী সম্প্রদায় বমদের এ পাড়া ছাড়িয়ে আরো এক কিলোমিটারের মতো পথ চললে পৌঁছা যাবে বিশাল এ ঝরনাটির কাছে। বিস্তির্ণ এলাকাজুড়ে এ জলপ্রপাতটির জলধারা প্রায় ৮০ ফুট ওপর থেকে পাহাড়ের গা বেয়ে আছড়ে পড়ে নিচে।
বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ৫২ কলোমিটার দূরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২২০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত একটি মনোরম পর্যটন কেন্দ্র। সেনাবাহিনী পরিচালিত এ পর্যটন কেন্দ্রটিতে থাকার জন্য কটেজ আছে। নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে যেদিকে চোখ যায় শুধু পাহাড় আর পাহাড়। কখনো কখনো এখানে পর্যটকদের সঙ্গে মেঘের মিতালিও হয়। বান্দরবান শহর থেকে দিনে দিনে জায়গাটি ঘুরে ফিরে আসা সম্ভব। এখানে যাওয়া আসার জন্য একটি জিপের ভাড়া পড়বে ৪০০০-৫০০০ টাকা। এখানে রাত্রী যাপনের জন্য নীলগিরির কটেজ আছে ও আগাম বুকিং দেও য়া যাবে।
বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার পূর্বে বান্দরবান-কেরানিরহাট সড়কের পাশে সুন্দর একটি জায়গা প্রান্তিক লেক। বিশাল লেকের চারধারে গাছের ছায়ায় এ জায়গায় বেড়াতে যে কারো ভালো লাগবে। বান্দরবান বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে এখানে আসতে সময় লাগবে এক ঘণ্টার মতো ।
বান্দারবান শহরের বুক চিরেই বয়ে গেছে সাঙ্গু নদী। আরাকান পর্বত থেকে বয়ে আসা এ নদীর আরেক নাম শঙ্খ নদী এ নদীর পানি এতই স্বচ্ছ যে নদীর তলার মাটি দেখা যায়। সাঙ্গু নদীতে নৌভ্রমণ করতে যে কারো ভালো লাগবে। শহরের ট্রাফিক মোড় সংলগ্ন সাঙ্গু ব্রিজের নিচেই পাওয়া যায় ইঞ্জিন নৌকা, স্পিড বোট ও হাতচালিত নৌকা। খরচ তুলনামূলক কম। এখানে নৌ ভ্রমণে ভাটির দিকে যেতে পারেন সীতামুড়া পাহাড় আর উজাঞ্জে তারাগাছা পর্যন্ত।
বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত থানচি। এটি পার্বত্য বান্দরবানের একটি উপজেলা। থানচির মূল বৈশিষ্ট্য আকাশ ছোঁয়া পাহাড়ের ঢালে ঢালে নানান আদিবাসীদের বসবাস। এখানেই পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে বয়ে চলেছে পাহাড়ি সুন্দরী সাঙ্গু নদী। মারমা শব্দ থান চৈ থেকে থানচির উৎপত্তি। থান চৈ অর্থ বিশ্রামের জায়গা। অতীত কালে নৌ চলাচলের সময় যাত্রীরা বিশ্রামের জন্য এ এলাকায় থামতেন বলে এটি থান চৈ নামে পরিচিতি পায়। সময়ের ব্যবধানে থান চৈ থানচিতে রূপ নেয়। বান্দরবান থেকে সকাল ৮ টায় একটি বাস ছেড়ে যায় থানচির উদ্দেশ্যে। এ ছাড়া সকাল ৯টা, দুপুর ১২টা এবং বিকেল ৩টায় একটি করে চাঁদের গাড়ি (জিপ)ও ছাড়ে এ পথে। এ ছাড়া সকাল ৫টায় সাঙ্গু ঘাট থেকে একটি ইঞ্জিন নৌকা ছাড়ে থানচির উদ্দেশ্যে।
বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার দুর্গম পথে মনোরম একটি জলপ্রপাত নাফাখুম। এর আরেক নাম রেমাক্রি জলপ্রপাত। প্রায় চল্লিশ ফুটেরও বেশি প্রস্থের জায়গাজুড়ে প্রায় ২০-২৫ ফুট ওপর থেকে জলপ্রপাতের ধারা অবিরাম পড়তে থাকে রেমাক্রি খালের ওপর। এর চারপাশের শুধু পাথর আর পাথর। এত সুন্দর জলপ্রপাত দেশে দ্বিতীয়টি নেই বললেই চলে। নাফাখুম যেতে হলে বাসে প্রথমে যেতে হবে বান্দরবান জেলা সদরে। সেখান থেকে চাঁদের গাড়িতে চড়ে থানচি উপজেলা সদরে। থানচি থেকে রেমাক্রি আসতে হবে নৌকায়। নাফাখুম তার পরিপূর্ণ প্রাণ ফিরে পায় বর্ষাকালে। তবে বর্ষায় এ নৌপথের স্রোত পুরো যাত্রাপথটিকেই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে।
বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ৯৮ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ি লামার অবস্থান। নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ জায়গাটি। সরকারি ভ্রমণ সংস্থা পর্যটন করপোরেশন এখানে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৫০০ ফুট উঁচুতে গড়ে তুলেছে মিরিঞ্জা পর্যটন কেন্দ্র। আকাশ পরিষ্কার থাকলে এখান থেকে সহজেই দেখা যায় বঙ্গোপসাগরের বয়ে চলা। বান্দরবন থেকে দুপুর ২টায় লামা যায় পূর্বাণী পরিবহনের একটি বাস এবং বিকেল ৩টায় ছেড়ে যায় একটি চাঁদের গাড়ি (জিপ)।
বান্দরবানে প্রধানত ১১টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস। এরা হলেন – মারমা, চাকমা, মুরং, ত্রিপুরা, লুসাই, খুমি, বম, খেয়াং, চাক, পাংখো ও তংচংগ্যা। এ জেলায় বসবাসরত এসব নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি আছে। বান্দরবানের আদিবাসী সম্প্রদায়ের বেশ কিছু উৎসব রয়েছে। এগুলোর কয়েকটি হল – রাজপুন্যাহ, বৈসাবি, প্রবারণা পূর্ণিমা, বৌদ্ধ পূর্ণিমা, মারমা আদিবাসীদের রখটানা উৎসব, জুম নৃত্য, ম্রো নৃত্য ইত্যাদি।
বোমাং রাজবাড়ি
বান্দরবান শহরের মধ্যেই রয়েছে বোমাং রাজার রাজবাড়ি। রাজার উত্তরসূরিরা এখনো এসব বাড়িতে বসবাস করেন। তাঁদের কাছে অনুমতি নিয়ে দেখে আসতে পারেন এ রাজবাড়ি।
জিনসিং ক্লাকনক জলপ্রপাত
জিনসিং আদিবাসী এক মেয়ের নাম। আর ক্লাকনক শব্দের অর্থ পড়ে যাওয়া। জিনসিং নামে এক বম আদিবাসী কন্যা এ জলপ্রপাতে পড়ে মৃত্যুর কারণেই এর এরকম নাম বলে জনশ্রুতি আছে। কেওক্রাডং থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার গেলে সিনসং পাড়া। আদিবাসীদের এ পাড়াটিও ঘুরে দেখার মতো। এখান থেকে আরো প্রায় এক কিলোমিটার দক্ষিণে গেলে চমৎকার এ জলপ্রপাতটির দেখা মিলবে।